Friday, August 23, 2019

ডেঙ্গু জ্বর পরবর্তী করণীয়,অসাবধানতা বশত মৃত্যু বরন ।

ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। বাংলাদেশের আনাচকানাচে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত বা পাওয়া যাচ্ছে।জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ,এই সময়টাতে এডিস মশার বংশ বিস্তার ঘটে থাকে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের সময়কাল এগিয়ে আসছে এবং লম্বা হয়েছে।এই বৎসর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকসহ অনেকে মৃত্যু বরন করেছে । তাই ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে মানুষের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
dengue-ডেঙ্গু জ্বর-Easy tips for life

ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোবিন্দ চদ্র রায় বলেছেন, এখন যেহেতু ডেঙ্গুর সময়, তাই জ্বর হলে মোটেও অবহেলা করা উচিত না। জ্বরে আক্রান্ত হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই সবচেয়ে উত্তম হবে। জ্বরের সঙ্গে যদি সর্দি-কাশি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কিংবা অন্য কোনো সমস্যা থাকে, সেটি ডেঙ্গু না হয়ে অন্য কিছু হতে পারে। আবার একই সঙ্গে ডেঙ্গু জ্বর ও অন্য সমস্যাও হতে পারে। আবার ডেঙ্গু জ্বর নেমে গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। কারণ,ডেঙ্গু জ্বর–পরবর্তী সমস্যায় মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।
খাদ্য গ্রহন?
প্রচুর পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে।ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস ও খাওয়ার স্যালাইন। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, পানিজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। তেল বা চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার এই সময়ে এড়িয়ে যাওয়াই সর্বউত্তম।
যেসব ওষুধ সেবন উচিত নয় ।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা যাবে না।কি ওষুধ খাওয়া যাবে আর কী ওষুধ খাওয়া যাবে না, তা ডাক্তারের পরামর্শে ঠিক করুন।
প্লাটিলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে চিন্তিত?
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্তকণিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। যদি শরীরের কোনো অংশ দিয়ে রক্তপাত না হয়, তবে প্লাটিলেটের সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কখন প্লাটিলেট দিতে হবে, সেই বিষয়টি বরং চিকিৎসকের ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো।
নারীর ক্ষেত্রে বেশি সতর্কতা ।
মেয়েদের বেলায় অসময়ে ঋতুস্রাব বা রক্তক্ষরণ হলে অনেক দিন পর্যন্ত রক্ত যেতে পারে। যাদের এখনো ঋতুস্রাব হয়নি, তাদেরও এই ডেঙ্গু জ্বরের কারণে তা শুরু হয়ে যেতে পারে। এমন হলে অবশ্যই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসককে জানাতে হবে। তা না হলে প্রচুর রক্তপাত হতে হতে রোগী শকে গিয়ে মারাও যেতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর হলেই কি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ?
ডেঙ্গু জ্বরের তিনটা স্তর রয়েছে।

প্রথম রোগীরা স্বাভাবিক থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী এই ধরনের। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই।

দ্বিতীয়ত ডেঙ্গু রোগীদের শরীরে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।তার পেটে ব্যথা হতে পারে, বমি হতে পারে প্রচুর বা সে কিছুই খেতে পারছে না। শরীরের যেকোনো অংশে রক্তপাত হতে পারে, জন্ডিস দেখা দিতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় জ্বর ভালো হয়ে যায় কিন্তু রক্তচাপ কমে যায়, শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল ভর্তি হতে হবে।
তৃতীয় ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে।
পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে ।
জ্বর আক্রান্ত হলে বিশ্রামে থাকতে হবে। জ্বর নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা উচিত নয়। একজন ব্যক্তি স্বাভাবিক প্রতিদিন যেসব পরিশ্রমের কাজ করে, সেগুলো না করাই ভালো। জ্বর ভালো হলেও বিশ্রামে থাকতে হবে। কারণ, ডেঙ্গু জ্বর–পরবর্তী সমস্যা তাতে আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে, যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। কত দিন বিশ্রাম নিতে হবে তা ডেঙ্গু–পরবর্তী সমস্যার তীব্রতার ওপর নির্ভর করবে। তাই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.