১৭ ই জুন ১৯৪৮। শ্রীমান অমলেন্দু, বয়স ৬ বছর।১৮/২ক্রীক লেন।
গত তিন সপ্তাহ ধরে আমাশায় ভুগতেছে। স্হানীয় একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক চিকিৎসা করছেন।প্রত্যহ ১৪/১৫ বার পাতলা লাল বর্নের, কখনো চটচটে আম যুক্ত বাহ্যে হইতেছে।
অসহ্য যন্ত্রনা,বাহ্যের পর বেদনা ও কুন্হন থাকে না।বাহ্যে করার পর একটু চুপ করে থাকে।কিছুক্ষণ পরেই পূনরায় বাহ্যের সময় যন্ত্রণা ও কুন্হন থাকে,বাহ্যের পূর্বে পেট দুমড়াইয়া থাকে। মলে খুব দুর্গন্ধ থাকে।জিহ্বা শুশ্ক,অগ্রভাগ লালবর্ণ। তলপেটের ডানদিকে সামান্য প্রদাহ ও বেদনা,সেজন্য চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে চায়।দ্বিভাজ হইয়া সম্মুখের দিকে দুমড়াইয়া থাকলে বেদনার কিছু উপশম হয়।
গত কয়েকদিন হতে রোগী খুব অবসন্ন হয়ে পড়েছে-কোন কোন সময় নেশাচ্ছন্ন মত পরে থাকে এবং এজটু পরেই জাগলে এপাশ ওপাশ করতে থাকে।
প্রথমাবস্হায় জ্বর বেশি ছিল,মাঝে কিছু কমেছিল।পুনরায় গত কয়েকদিন হতে ১০০/১০১ ডিগ্রি সর্বদা রহিয়াছে।
মাথা সোজা করে বসতে পারে না।
আমার পূর্ব বর্তি চিকিৎসক পর পর একোনাইট, বেলেডোনা,মার্ক-সল,মার্ক-কর,ও শেষে কলোসিন্হ দিয়েছেন,তাহাতে কোন ফল হয় নাই।
রোগের প্রারম্ভিক অবস্হার বিবরণ নিয়ে জানলাম যে বালকটি পিড়িত হওয়ার পূর্বে অত্যাধীক গরমের জন্য স্যাৎঁ স্যাতে ছাদে পর পর কয়েকদিন ঘুমিয়ে ছিল।
তারপরেই গা-হাত-পা বেদনা সহ জ্বর ও তৎসহ উদরাময় দেখা দিয়েছে।
২/১ দিন পরেই উহা রক্তমাশয়ে পরিনত হয়েছে।রেগীর পুর্ব ইতিহাস ও বর্তমান লক্ষন বিবেচনা করে তাকে প্রথম দিন রাস-টক্স ৩০ শক্তি ছয় ঘন্টা পর পর দুই মাত্রা দিলাম।২য় দিন রোগীর অবস্থার কিছু উন্নতি দেখা যায়।২য় দিন একই ঔষধ ছয় ঘন্টা পর পর দেওয়া হয়।৩য় দিন রোগীর জ্বর বিরাম হয়েছে,মাত্র তিনবার হলুদ বর্নের বাহ্য হয়েছে,আম ও রক্ত সামান্য পরিমাণ আছে।কুঁথুনি ও পেট ব্যাথা নাই বললেই চলে।রোগীর আর তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নেই। ঔষধ পরিবর্তন করলাম না। ৩য় দিন একই ঔষধ এক মাত্রা দিলাম।৪র্থ দিন বাহ্যে রাতে মাত্র একবার হয়েছে কিন্তু সামান্য রকৃত রয়েছে এবং কখনো বেশ দুর্গন্ধ রয়েছে। ঐদিন সালফার ৩০ শক্তি এক মাত্রা দিলাম। পরদিন রোগীর মল স্বাভাবিক, দুর্গন্ধ ও তেমন নেই,রক্ত ও নেই। তন্দ্রাভাব,কুন্হন,বেদনা,অস্হিরতা পূর্বেই দূরীভুত হয়েছে। আর ঔষধের দরকার নাই।
ডাঃ সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ
এই লিখা সুধুমাত্র জনসচেতনতার উদ্দেস্যে।